ওসমান হারুনী,ডেস্ক নিউজ:
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রেখে প্রায় চল্লিশ বছর ধরে ঘোড়ার হাট বসছে জামালপুরের রশিদপুর ইউনিয়নের তুলসিপুর গ্রামের তুলসীপুর বাজারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই হাটে পাইকার ও ক্রেতারা আসে ঘোড়া কেনাবেচা করতে।
একটা সময় গ্রাম-বাংলার মানুষের ঘোড়া খেলা ও পণ্য পরিবহন এবং যাতায়াতের অন্যতম বাহন ছিলো ঘোড়ার গাড়ি, তাই ঘোড়ার কদরও ছিল বেশি। সে সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘোড়া খেলা হতো; বসতো ঘোড়ার হাট। এখন দেশের সবচেয়ে বড় ঘোড়ার হাট বসছে জামালপুর সদরের তুলসিপুরে।
দেশের রাস্তাঘাট যখন উন্নত ছিলো না, তখন একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত গরু ও ঘোড়ার গাড়ি। বিশেষ করে গ্রাম-বাংলার মানুষের পণ্য পরিবহন এবং যাতায়াতের অন্যতম বাহন ছিল ঘোড়ার গাড়ি। সে সময় ঘোড়ার কদরও ছিল বেশ। তাই ঘোড়া কেনাবেচা করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসত ঘোড়ার হাট। কিন্তু কালের পরিক্রমায় গ্রামেও লেগেছে আধুনিকতার ছোয়া। এখন ঘোড় দৌড় আর প্রত্যন্ত গ্রাম ছাড়া চোখে পড়েনা ঘোড়া কিংবা ঘোড়ার গাড়ি। তাই দিনের পর দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ঘোড়ার হাটগুলো। বর্তমানে দেশের যে কটি ঘোড়ার হাট কোন রকমে টিকে রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো এবং বড় হাট বসছে জামালপুর সদরের তুলসিপুরে। এই হাটে জামালপুর ছাড়াও ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, শেরপুর, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা আসেন ঘোড়া বিক্রি করতে। গাড়ি ক্রয়ের পাশা পাশাপাশি ঘোড়া ও গাড়ীর প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রও পাওয়া যায় এই হাটে। ক্রেতারাও আসেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তা ক্রয় করতে। ক্রেতা এবং বিক্রেতারা হাটে আনা ঘোড়ার শক্তি পরীক্ষার নাম দিয়েছে রিমান্ড। ঘোড়ার শক্তি পরীক্ষার জন্য হাটের মধ্যে বালু দিয়ে তৈরী করা হয়েছে রাস্তা। সেই রাস্তায় ১০ থেকে ১৫ জন মানুষ উঠিয়ে ঘোড়ার গাড়ি ছুটানো হয়। যে ঘোড়া বালুর মধ্যে গাড়ি টেনে নিয়ে যেতে পারে, সেই ঘোড়ার শক্তি তত বেশী।
শুধু বালু মধ্যেই নয়, শক্তি পরীক্ষার জন্য ঘোড়াকে হাটের পাশে খালের পানি মধ্যেও ছুটানো হয়। উচু পাড় বেয়ে উঠানামা করানো হয় ঘোড়ার গাড়িকে। রিমান্ডে যে ঘোড়া সবচেয়ে বেশি শক্তি দেখাতে পারে, সে ঘোড়ার দামও ততো বেশি।
এব্যাপারে তুলসীপুর ঘোড়াহাট পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক জানান, জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী এই ঘোড়া হাটে দূর দুরান্ত থেকে আগত পাইকার,ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য থাকা ও খাওয়াসহ নিরাপত্তার ব্যবস্হা রয়েছে।